স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া:
চকরিয়ায় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মালয়েশিয়া প্রবাসি আবুল হাসেম (৪৫) নামের একব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ২৮ আগস্ট রাত ১টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের জালিয়াপাড়াস্থ নিজ বাড়ির ভেতর থেকে চকরিয়া থানা পুলিশ হাশেমের গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করে। হাশেম একই এলাকার মৃত আবদু রাজ্জাকের পুত্র। বিগত ৪ মাস পূর্বে সে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে আসেন।
এদিকে মালয়েশিয়া প্রবাসী আবুল হাসেম হত্যার সাথে জড়িত খুনিদের গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ করেছে। শতশত এলাকাবাসি মিছিল নিয়ে চকরিয়া পৌরশহরে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেছে। তাদের দাবী হাশেম আত্মহত্যা করেনি। তাকে শ্বাষরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। স্ত্রীর পরকিয়া প্রেম এবং বেপরোয়া আচরণে বাধা দেওয়ায় স্বামীকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। পরে তাকে ফ্যানের সাথে ঝুলানো হয়েছে। যে রশি তার গলায় পাওয়া গেছে সেটা দিয়ে একটা মুরগিও মারা যাবে না। খাটের মধ্যে বসানো অবস্থায় ছিলো তার দেহটি। তার হত্যার ঘটনায় স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলেও জানান এলাকাবাসী। যেখানে তাকে হত্যা করা হয়েছে সেখানেই দাফন করতে হবে। একপর্যায়ে স্থানীয় এলাকাবাসির প্রতিবাদের মুখে তার লাশটি উঠানের মধ্যে দাফন করা হয়েছে। স্ত্রী খদিজা বেগমকে গ্রেফতার করলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে জানান এলাকাবাসী।
হাশেমের ভাতিজা মাওলানা মাহমুদুল হাসান জানান, তার চাচা আবুল হাশেমের সাথে প্রায় ১৪ বছর পূর্বে একই এলাকার হাজী সৈয়দ আহমদের মেয়ে খদিজা বেগমের মধ্যে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে তিনটি সন্তানও রয়েছে। পরিবারের সূখ শান্তির কথা ভেবে হাশেম ১০বছর পূর্বে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান। স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার কিছুদিন যেতে না যেতে স্ত্রী খদিজা বিভিন্ন পুরুষের সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। স্বামীর বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা দিয়ে জমি-জমা বাড়ি খদিজা নিজের নামে করে ফেলে। এমনকী পাঠানো টাকা দিয়ে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ে খদিজা। এভাবে তার চাচা মালয়েশিয়া থেকে প্রায় ৪০লাখ টাকা পাঠিয়েছেন।
স্ত্রীর পরকিয়া প্রেম ও তার নামে সমস্থ সম্পদ করে ফেলার খবর শুনে আবুল হাশেম ৪ মাস পূর্বে দেশে চলে আসেন। এনিয়ে শুরু হয় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি। স্ত্রীর এ ধরনের বেপরোয়া আচরণে হাশেম এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিচার দিয়ে কোন প্রতিকার পায়নি।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল আমিন টিপু জানিয়েছেন, আবুল হাসেমকে হত্যার পর গলায় রশি পেছিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। হত্যাকারীদের শাস্তি চেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, খবর পেয়ে থানার উপ-পরিদর্শক গৌবিন্দ পুলিশ দল নিয়ে লাশটি উদ্ধার করেছেন। ময়না তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে হত্যাকান্ডের আসল রহস্য। এঘটনায় এজাহার দিলে সেটি নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। ##
পাঠকের মতামত: